আবাস প্রকল্প সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে বাংলায় এসেছিল কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল। তারপর ওই দল একাধিক অনিয়ম পেয়েছে বলে দাবি করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু চিঠি লিখে জানিয়েছিল,আবাস যোজনায় কোনও দুর্নীতি হয়নি। তবে কিছু অভিযোগ আছে। সেই অভিযোগগুলি লিখিতভাবে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদ্বীকে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি চিঠি দিয়ে জানিয়েছিল গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। তবে কেন্দ্রের তোলা অভিযোগের কোনও সারবত্তা নেই বলে পাল্টা চিঠি দিয়ে মোদী সরকারকে সেটা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিল নবান্ন।
দুর্নীতি যখন হয়নি তখন টাকা আটকে কেন? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। চিঠিতেও লেখা হয়েছে একই কথা। এমনকী আবাস প্লাস প্রকল্পের অধীনে অনুমোদিত ১১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৪৮৮টি বাড়ির প্রথম কিস্তির টাকা আটকে রেখে আসলে কেন্দ্র নিজেদের নিয়মকেই লঙ্ঘন করছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে ওই চিঠিতে। অনুমোদন দেওয়ার একসপ্তাহের মধ্যে নিজের অংশের টাকা দেওয়ার কথা ছিল কেন্দ্রের। সেখানে তা করা হয়নি। দুর্নীতির প্রমাণ মেলেনি। তারপরও টাকা আসেনি।
https://www.youtube.com/watch?v=YulZhYzhnwI
এদিকে রাজ্যের পক্ষ থেকে ৬ মার্চ গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের সচিবকে একটি ১০ পাতার চিঠি লিখেছেন রাজ্যের পঞ্চায়েত সচিব পি উলগানাথান। সেই চিঠিতে পূর্ব মেদিনীপুর, মালদা, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম মেদিনীপুর, কালিম্পং, দার্জিলিং, নদীয়া এবং পূর্ব বর্ধমান জেলায় আবাস প্রকল্প নিয়ে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষণ দলের তোলা প্রতিটি অভিযোগ ধরে ধরে উত্তর দিয়েছে রাজ্য। কেন্দ্রের চিঠির প্রেক্ষিতে জেলাশাসকদের দিয়ে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে তদন্ত করিয়ে তবেই রাজ্যের পক্ষ থেকে অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট (এটিআর) পাঠানো হয়েছে। এবার দ্রুত আবাস প্লাসের টাকার প্রদেয় অর্থ ছাড়ার জোর দাবি তুলল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
আর কী লেখা হয়েছে? কেন্দ্রকে পাঠানো চিঠির শেষ দুটি পাতায়য় রাজ্য জানিয়েছে যে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষণ দল ২০১৮ সালে আবাস প্লাস নিয়ে হওয়া সমীক্ষায় থাকা ফাঁকগুলি তুলে ধরেছে। কেন্দ্রের শর্ত মেনেই বাড়ি বাড়ি যাচাই পর্ব চালিয়ে চূড়ান্ত উপভোক্তা তালিকা তৈরি করেছে রাজ্য। ২০১৮ সালের তালিকায় থাকা ৪০ শতাংশের নাম বাদ পড়েছে। ফলে কেন্দ্রের চিঠিতে উল্লেখিত ‘অস্পষ্ট অভিযোগগুলির’ বিরুদ্ধে নতুন করে কোনও পদক্ষেপ করার প্রয়োজন নেই। কারণ, অনেক আগে থেকেই এই সমস্ত ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এমনকী কেন্দ্রের তোলা অভিযোগগুলির প্রমাণ না দেওয়ায়, রাজ্যের পক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা অসম্ভব বলেও জানিয়েছে নবান্ন। এই বিষয় পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, ‘একাধিকবার আমরা কেন্দ্রকে এই ধরনের উত্তর পাঠিয়েছি। ওরা তো আসলে রাজনৈতিক কারণে টাকাটা আটকে রেখেছে। এখন দেখার, কবে টাকা ছাড়ে।’