প্রকাশ সিনহা, আসানসোল: অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) দিল্লি-যাত্রা নিয়ে টানাপোড়েন জারি। অনুব্রতকে নিরাপত্তার প্রশ্নে হাত তুলে নিল পুলিশ, খবর সূত্রের। আসানসোল থেকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়, জানাল পুলিশ, খবর সূত্রের। ইডিকে পুলিশের অবস্থানের কথা জানিয়ে ইমেল জেল কর্তৃপক্ষের। ‘অনুব্রতকে কেন্দ্রের অধীনে থাকা হাসপাতাল থেকে ফিট সার্টিফিকেট দিলেই দিল্লি নিতে পারবে ইডি’, গতকালই রায় দেয় কলকাতা হাইকোর্ট
অনুব্রত মণ্ডলের দিল্লি-যাত্রা নিয়ে টানাপোড়েন জারি। আসানসোল জেলকে ই-মেল করে ইডি। ইডি সূত্রে খবর, ‘জেলে গিয়ে অনুব্রতকে নিয়ে আসবে না ইডি, যেভাবে সায়গল হোসেনকে নিয়ে আসা হয়েছিল, সেভাবেই নিয়ে আসা হোক অনুব্রতকে। আদালতের নির্দেশনামায় এরকম কিছু লেখা নেই’। আসানসোল জেল কর্তৃপক্ষ জানাল আইজি জেলকে। কাল আসানসোল সিবিআই স্পেশাল কোর্টের দ্বারস্থ হবে ইডি, সূত্রে খবর।
হাইকোর্টের নির্দেশনামাতেও উঠে এসেছে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে তৃণমূল নেতা শিবঠাকুর মণ্ডলের করা খুনের চেষ্টার অভিযোগের প্রসঙ্গ। নির্দেশনামায় বিচারপতি বলেন, অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে যাওয়া রুখতে, রাজ্য পুলিশকে সচেতনভাবে ব্যবহার করা হয়েছে।
গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হওয়ার আগে বা পরে। কখনও পুলিশকে ব্যবহারের অভিযোগ। কখনও আবার সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসককে চাপ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে। আর, এসবের মধ্যেই রবিবার, অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া থেকে কার্যত হাত তুলে নিয়েছে আসানসোল কমিশনারেটের পুলিশ।
১৯ ডিসেম্বর, অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ায় জন্য ইডির আবেদনে, ছাড়পত্র দেয় দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত। সেদিন দুপুরেই, অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে একবছর আগে, তাঁকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেন তৃণমূল কর্মী শিবঠাকুর মণ্ডল। সঙ্গে সঙ্গে মামলা রুজু করে পরের দিনই সেই মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে সাতদিনের হেফাজতে নেয় পুলিশ।
শনিবার, কলকাতা হাইকোর্টে অনুব্রত মণ্ডলের মামলার নির্দেশনামায় বিচারপতি বিবেক চৌধুরী বলেন, অনুব্রত মণ্ডলের করা একাধিক আবেদনে এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, তিনি আদালতের কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। শুধু তাই নয়, তাঁকে দিল্লিতে হাজির করার নির্দেশ যাতে ইডি কার্যকর করতে না পারে, তার জন্য অনুব্রত মণ্ডল আবেদনের পর আবেদন করেছেন। বক্তিগতভাবে চেষ্টা করার পাশাপাশি, রাজ্য পুলিশ-প্রশাসনকেও ব্যবহার করা হয়েছে।
অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগে গত বছরের ৯ ডিসেম্বরে, দুবরাজপুর থানায় একটি মামলা হয়। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, যেই সময় বিচারক তাঁকে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেন, সেই দিনই ওই মামলা রুজু হয়েছে। এটা কোনও কাকতালীয় বিষয় নয়। অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে যাওয়া রুখতে, রাজ্য পুলিশকে সচেতনভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। আর, আদালতের এসবের মধ্যেই অনুব্রত মণ্ডলকে জেল থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশ উদ্যোগী না হওয়ায়, তীব্র কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছে বিরোধীরা। অনুব্রত মণ্ডলের দিল্লি-যাত্রায় ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে। সব মিলিয়ে, অনুব্রত মণ্ডলের দিল্লি-যাত্রা নিয়ে ধোঁয়াশার মধ্যেই তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক তরজা।